Tarashis Gangopadhyay Blog
Tarashis Gangopadhyay president of Sharanagoto Somproday
How can I be happy
One of my reader today asked me,"How can I be happy?". I told her," Just draw yourself away from the rat-race to get something more.Craving for more will never make you happy.If you want more,you will have more but your mind will again crave for more.So there is no satisfaction in "more".So just try to acquire the necessities of life and then try to make yourself satisfied.That is the essence of happiness.To be happy you must appreciate what you already have. Just do this simple thing and you will be happy for sure. - -Tarashis Gangopadhyay
সুন্দরের পূজারী
আমরা সুন্দরের পূজারী। আর অসুন্দরকে এড়িয়ে চলি। কিন্তু বুঝি না যে সুন্দর হোক বা অসুন্দর সবই দুদিনের খেলা। দুদিন ফুরালেই মিশে যাবে পঞ্চভুতের সাথে। তাই সুন্দর মুখের পরিবর্তে সুন্দর মনের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। মুখের সৌন্দর্য আজ আছে কাল থাকবে না। কিন্তু মনের সৌন্দর্য থাকবে চিরকাল। ভালো থেকো সবাই। ইতি তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
অশান্তি থেকে উদ্ধারের পথ
মানুষের জীবনে অশান্তির কারণ সংসার . সংসারের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপিত হলেই মন অশান্ত হয়ে পড়ে .. মনকে শান্ত করার জন্যে ঠাকুর শ্রীকৃষ্ণ তিনটি পথ বলেছেন - কর্মযোগ , জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগ.. প্রথমে আসি কর্মযোগের কথায় .. কর্মযোগ হল ফলের আশা না করা ও কর্তৃত্বের অভিমান ত্যাগ করে নির্লিপ্তভাবে কর্ম করা..এতে সংসার থেকে আসক্তি চলে যায়..ফলে মনে শান্তি ও আনন্দ আসে..যাদের যোগবুদ্ধি আছে তারা কর্মফল পরিত্যাগ করে জন্মবন্ধন থেকে মুক্তি লাভ করেন. দ্বিতীয়তঃ আসছে জ্ঞানযোগ..জ্ঞানযোগ দিয়ে আত্মস্বরুপে স্থিত হওয়া যায়..এবং তাতে লাভ হয় অনন্ত আনন্দ .. যে মানুষ অন্তরাত্মাতেই সুখযুক্ত এবং আত্মাতেই জ্ঞানযুক্ত সেই জ্ঞানযোগী নির্বাণ ব্রহ্ম লাভ করেন .. তৃতীয়তঃ আসছে ভক্তিযোগ .. এতে ভগবানের সঙ্গে অভিন্ন সম্পর্ক স্থাপন হয় .. তাতে লাভ হয় প্রেম বা অনন্ত আনন্দ.. জ্ঞানমার্গের পথিকরা ভগবানের দর্শন চান না .. তাঁরা আত্মস্বরুপ জেনে এবং তাতে প্রবিষ্ট হয়ে খুশী থাকেন .. তাই তাঁদের আর ভগবান দর্শন হয় না .. কিন্তু ভক্তিমার্গের পথিকদের আত্মস্বরূপ জ্ঞান হয় এবং তাঁরা আত্মস্বরুপে অধিষ্ঠিতও হতে পারেন আর সেইসাথে তাঁদের ইষ্টদর্শন হয় .. লাভ হয় অনন্ত প্রেম .. তখন ভক্ত আর ভগবান প্রেমিক আর প্রেমাস্পদের মত এক হয়ে যান .. এ প্রসঙ্গে শ্রী রাধার কথা বলা যায় .. তিনি বলেছিলেন - শ্রীকৃষ্ণ দর্শনের আগেই তাঁর শ্রী কৃষ্ণে প্রীতি হয়েছিল এবং দৃষ্টি বিনিময় হওয়ার পর সেই অঙ্কুরিত অনুরাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে দিনের পর দিন ধরে .. দেখতে দেখতে সেই প্রেম যেন দুজনের মনকে পেষণ করে অভিন্ন করে তুলেছে .. ফলে শ্রীরাধা তখন আর রমনী স্বরূপে আবদ্ধ ছিলেন না .. শ্রী কৃষ্ণও আবদ্ধ ছিলেন না রমণ স্বরূপে .. দুজনে একে অপরের সাথে মিশে এক হয়ে গেছিলেন ভক্ত ও ভগবান রূপে .. এই তো প্রেমের শ্রেষ্ঠ উপহার . ভক্তিয়োগের পরম নিদর্শন . তাইতো বলি - প্রথমে কর্ময়োগের মাধ্যমে নিজেকে সংসারের প্রতি নির্লিপ্ত কর আর তারপরে ঝাঁপ দাও ভক্তির সাগরে .. জ্ঞানের সাগরেও ঝাঁপ দিতে পারো ..তবে ভক্তিতে পাবে তাঁর লীলার আস্বাদ যা জ্ঞানে নেই .. জ্ঞানী তো ব্রহ্ম সত্য জগত মিথ্যা জেনে আত্মস্বরুপে স্থির হয়ে থাকেন পরম আনন্দে ..ভক্ত সেইসাথে তাঁর পরম প্রেমিকের লীলার রসও আস্বাদ করেন .. তাইতো ভক্তি যোগের চেয়ে বড় পথ হয় না .. ভালো থাকবেন . শুভেচ্ছাসহ তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
সম্পর্ক যেন গাছের গুঁড়ি
সম্পর্ক যেন গাছের গুঁড়ি
মানুষের জীবনে সব সম্পর্কই গাছের গুঁড়ির মত। সম্পর্ক যত গভীর হয় গুঁড়িও তত মোটা হয়। কিন্তু গভীর সম্পর্ক তৈরী হলেই যে কেউ তা নিয়ে যা খুশী করতে পারবে সেই ধারণা ভুল। হয়ত একটু সরু গুঁড়ির গাছকে দুএক আঘাতেই কেটে দেয়া যায় কিন্তু মত গুঁড়ির গাছকে অত অল্পে কাটা যায়না। কিন্তু তাই বলে যে মত গুঁড়ির গাছকে কাটা যায়না এমনও তো নয়। হয়ত অল্প কয়েক আঘাতে সেই মত গুঁড়ির কিছু হয়না।সামান্য রক্তপাতেই হয়ত তা থেমে যায়। (গাছ কাটলে যে কষ বেরয় তাকেই বলা হয় গাছের রক্ত )কিন্তু সেখানে বারবার আঘাত পড়লে মত গুঁড়িও একদিন ভেঙ্গে পড়ে। একই কথা যেকোনো গভীর সম্পর্কের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য- সে যতই গভীর হোক - বারবার আঘাত তাকেও কেটে দেয় একদিন।
তাই ভালো সম্পর্ক পেলে - সে বন্ধু হোক,ভাইবোন হোক,প্রেমিক-প্রেমিকা হোক,স্বামী স্ত্রী হোক,গুরু শিষ্য হোক - তাকে ভগবানের দান মনে করেই যত্ন করা উচিত। একটি গাছকে বড় করে তুলতেই সময় লাগে। সেটিকে কাটতে বিশেষ কিছু সময় লাগেনা। তাই জীবন যদি তোমাদের হাতে কোন ভালো সম্পর্ক তুলে দেয় তাকে রক্ষনাবেক্ষণ কোর ইশ্বরের আশীর্বাদের রূপে - তার উপর আঘাত পড়তে দিওনা। সেখানে আঘাত করা মানে কিন্তু সেই প্রথম জীবনের কালীদাসের মত অবস্থা হবে - সেই যে ডালে বসে আছো সেই ডালটিকেই কাটতে চাইছ। কখনো ভেবনা - এ সম্পর্ক অনেক গভীর। শত আঘাতেও কিছু হবেনা। প্রতিটি আঘাতই তোমাকে সেই সম্পর্ক থেকে একটু একটু করে দূর করে দেবে।তারপর একদিন দেখবে - তুমিও আছ ,সেও আছে কিন্তু সম্পর্কটা আর নেই। তখন হাজার চেষ্টা করেও আর ফিরে পাবেনা সেই হারিয়ে যাওয়া দিন। এই নশ্বর পৃথিবী থেকে যা যায় তা চিরতরেই যায়। তাই সময় থাকতেই সাবধান হওয়া ভালো।
ভালো থাকবেন .
শুভেচ্ছাসহ
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
জীবনে একটাই সার
জীবনে একটাই সার - ভগবানের সাথে সম্পর্ক গড়তে হবে। তাঁকে ভালবাসতে হবে। নিজের সমস্ত সত্বা দিয়ে বাসতে হবে ভালো। কিন্তু পরিবর্তে কিছু চাওয়া কলবে না,নির্লিপ্ত থাকতে হবে। ভগবানের এত করুণা যে তিনি শুধু যে ভক্তদের কৃপা করেন তাই নয়,শত্রুদেরও কৃপা করেন। ভগবানের প্রতি দ্বেষ ও শত্রুতা রেখে কংস জরাসন্ধও তাঁকে লাভ করেছিল। শুধু ভক্তভাবেই যে তাঁকে পাওয়া যায় তাই নয়,শত্রুভাবেও পাওয়া যায়। তিনি সকল ভাব বুকে টেনে নেন। তবে বৈশাখে গঙ্গাস্নানে যে আনন্দ মেলে তাতো মাঘ মাসে গঙ্গাস্নানে মেলে না। তেমনি তাঁর সাথে ভক্তি ও প্রেমের সম্পর্কে যে আনন্দ আসে তা হিংসা ও শত্রুতা স্থাপনে আসে না - এই যা। ভালো থেক .. শুভেচ্ছাসহ তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
আধ্যাত্মিক জীবনে কিভাবে এগোতে হবে
আধ্যাত্মিক জীবনে কিভাবে এগোতে হবে http://amitarashisbolchi.blogspot.in/
আধ্যাত্মিক জীবনে কিভাবে এগোতে হবে
আমার প্রিয় সুহৃদ অরুণাভ বাগচী একটি সুন্দর প্রশ্ন করেছিলেন - একটি মানুষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আধ্যাত্মিক জগতের যাত্রা কিভাবে হওয়া উচিত।
আমি উত্তরে বলেছিলাম - যদি শুরু থেকে বলতে বল তবে একদম শৈশব থেকেই বলি। একটি শিশু যখন একটু একটু করে বড় হচ্ছে তখন থেকেই তাকে আধ্যাত্মিক জগতে নিয়ে আসা উচিত।অবশ্য এজন্যে বাবা মায়েদেরও sacrifice প্রয়োজন। তাদের নিজেদেরও আগে আধ্যাত্মিক জগতের সাথে যুক্ত হওয়া দরকার।তবেই তো তারা পারবেন শিশুদের শেখাতে।|শিশুকে ছোটবেলায় প্রথমে আধ্যাত্মিক জগতের সম্বন্ধে আকৃষ্ট করতে হয় নানা গল্প বলে - পুরাণ,উপনিষদ ও পান্চাতন্ত্রের যে শিক্ষামূলক গল্পগুলো আছে সেগুলি তাদের বলা প্রয়োজন,বলা প্রয়োজন বিভিন্ন সাধক সাধিকাদের লীলাকথা। এতে হয়কি,তারা আধ্যাত্মিক জগতের উপর আকৃষ্ট হয়। সেইসাথে তাদের মধ্যে যাতে নীতিবোধ জেগে ওঠে সেটাও দেখতে হয়। এজন্যে বাবা মাকেও আদর্শের পথে এগোতে হয়। তাদের দেখেই তো সন্তান শিখবে।এরপর একটু পড়তে শিখলে রামায়ণ,মহাভারত হাতে ধরিয়ে দেয়া উচিত যাতে শ্রীরাম ও স্রীকৃষ্ণ সম্বন্ধে ভক্তি জাগে। আস্তে আস্তে ঠাকুরের সামনে বসিয়ে দেয়া উচিত যাতে তারা ঠাকুরের পূজা করে আগ্রহী হয়।আরেকটু বড় হলে হাতে ধরিয়ে দাও গীতা আর বল - দুএক পাতা সংস্কৃত ও তার অনুবাদ ঠাকুরের সামনে পড়ে যেতে। এতে হবে কি,গীতার শব্দব্রহ্ম শিশুর মধ্যে কাজ করতে শুরু করবে। প্রথমে সে কিছুই বুঝবেনা।বোঝার দরকার নেই।কিন্তু শব্দব্রহ্মের অনুরণন তার মধ্যে ঠিক কাজ করে তার ভিত গড়ে দেবে।এভাবেই ঠাকুরের সামনে তাকে বড় করতে থাক।এভাবে এগোলে ছেলেমেয়ে কখনো বিপথে যাবেনা।তারপর একটু বড় হলে তাকে নামজপ শেখাও।বাবা মায়ের চেয়ে বড় গুরু তো কেউ হয়না।তাই সন্তানের পছন্দমত নাম ধরে তাদের জপ দেখিয়ে দাও। এই নাম জপ তার অনেক প্রারব্ধ কাটিয়ে প্রস্তুত করে দেবে মন্ত্রদিক্ষার জন্যে। আর তারপর সময় হলেই গুরু আসবেন তার জীবনে। তারপর তার আধার অনুযায়ী তাকে ভক্তি,জ্ঞান বা যোগের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এভাবেই আধ্যাত্মিক পথে এগোতে হয়। এটাই তোমার ভাষায় প্রথম শ্রেণী থেকে মাস্টার ডিগ্রী নেয়ার পথ।আর এই যে পথের কথা বললাম - এটা একদম পরীক্ষিত পথ। এটা আমার ব্যক্তিগত জীবন থেকে পাওয়া শিক্ষা।
ভালো থাকবেন .
শুভেচ্ছাসহ
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
সূর্যের আলো
সূর্যের আলোর যা তেজ তাতে সবার পক্ষে সূর্যের পূজার সময়েও সূর্যের দিকে চাওয়া সম্ভব হয় না। তাই তারা জলে সূর্যের আলোর প্রতিবিম্ব দেখেই তার উপাসনা করে। একইভাবে এই তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের মনে হয় - ঈশ্বরকেও আমরা সম্যক উপলব্ধি করতে পারি না। অসীমকে কে ধারণা করবে ? তাইতো ঈশ্বর সব বস্তুর মধ্যেই আছেন জেনে আমরা শুধু তার বিগ্রহের মাঝেই তাঁর প্রকাশ খুঁজি। আর যেহেতু বিগ্রহকে আমরা ভক্তি দিয়ে অর্চনা করি তাই তাঁর মধ্যে পরমাত্মার প্রকাশও আমরা উপলব্ধি করতে পারি। ভালো থাকবেন .. শুভেচ্ছাসহ তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের সাথে কিছুক্ষণ
১ প্রশ্ন - প্রথমেই জানাই আমাদের সময় দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ।
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - ধন্যবাদটা বাদ দিলেই ধন্য হতাম ভাই।
প্রশ্ন - কিন্তু সবার মাঝে অধ্যাত্ম চেতনা ছড়িয়ে দেয়ার জন্যে আপনার প্রয়াস অবশ্যই সাধুবাদ দাবি করে।
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - সাধুবাদের জন্যে ধন্যবাদ। তবে খেয়াল রাখতে হবে -এই ধন্যবাদ নিতে গিয়ে আমার ভিতরের উদাসী সাধুটা যেন আমাকে বাদ দিয়ে চলে না যায়। কারণ ভিতরের সাধু যদি আমাকে বাদ দেয় তাহলে আমাকে গ্রহণ করবে অসাধু অহংবোধ। আর স্থুল অহংকে যদি আমি বাদ দিতে না পারি তবেই আমার ভিতরে জাগবে অহমিকা। ফলে আসবে সবার সাথে বাদানুবাদের ঝোঁক আর সেই বাদানুবাদ করতে করতে জীবনটাই হবে বরবাদ।
2) প্রশ্ন - আপনি তো ঈশ্বরে বিশ্বাসী। আপনার লেখা পড়লেই বোঝা যায়। কিন্তু কেন? আপনি কি ঈশ্বরকে দেখেছেন?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - দেখেছি বললে আপনার অভিপ্রেত জবাব হবে না হয়ত। আর দেখিনি বললে মিথ্যা বলা হবে। সকল জীবের মধ্যে তিনিই তো আছেন। তবে সব সাধনকথা তো প্রকাশের নয়। জ্ঞানীরা বলেছেন - আপন সাধনকথা বলিবে না যথা তথা।
প্রশ্ন - যে ইশ্বরকে আমি দেখলামই না তার অস্তিত্ব বিশ্বাস করব কেন?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - বিশ্বাস করতে কে বলেছে আপনাকে ? আমি কখনই বলব না আমার কথা বিশ্বাস করতে। কারণ সেটা আমার সাখ্যে আপনার বিশ্বাস হবে। আর সে হবে কাঁচা বিশ্বাস। তাই অন্যের কথায় বিশ্বাস করতে নেই। আগে নিজে সাধন করুন। তাতে যে উপলব্ধি পাবেন তা বিশ্বাস করুন।
প্রশ্ন - কোন সাধু আমাকে ইশ্বর দেখাতে পারবেন?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - আপনি অধিকারী হলে অবশ্যই পারবেন। তবে আপনার প্রস্তাবটা কেমন হলো জানেন? M .A ক্লাসের প্রফেসরকে নার্সারির ছাত্র যদি বলে -আমাকে এখনি M .A পাস করান তাহলে সেটি যেমন প্রশ্ন হবে এটিও তেমনি। কারো কাঁধে ভর করে ইশ্বর দর্শন হয় না। সেজন্যে গুরু নির্দেশিত পথে সাধনা করতে হয়। ইশ্বর Victoria Memorial নন যে কিছু টাকা দিয়ে টিকিট কাটলেই দেখা যাবে। কৃপা পেতে হলে কর্ম করুন,ফল পাবেন। কৃপা মানেই যে তাই - কৃ মানে কর,পা মানে পাবে।
৩) প্রশ্ন - ইশ্বর বলতে আপনি কি বোঝেন ?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - ব্যাকরণের দিক দিয়ে দেখতে গেলে ঈশ্বর হলেন জাগতিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ অবস্থানে অবস্থানকারী কোন অস্তিত্ব। অর্থাত যিনি সৃষ্টিকর্তা তাঁকেই আমরা ইশ্বর জানি।এক কথায় ঈশ্বর বলতে বোঝানো হয় - পরম সত্বাকে। অর্থাত যিনি সবের নিয়ন্তা। আবার যথাক্রমে শৈবধর্মে এবং ভক্তি আন্দোলনে ঈশ্বর বলতে তাঁদের আরাধ্য ইস্টকে অর্থাত যথাক্রমে শিব ও বিষ্ণুকে যথাক্রমে বোঝানো হয়।
প্রশ্ন - অর্থাত ইশ্বর আর ভগবান একই ?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - অবশ্যই এক।
প্রশ্ন - তাহলে দুটি আলাদা শব্দ কেন ইশ্বর আর ভগবান ?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - পদ্ম আর কমল তো দুটি ভিন্ন নাম কিন্তু বস্তু তো এক। এখানেও তাই। যিনি ঈশ্বর তিনিই একমাত্র ভগবান হতে পারেন। ভগবান মানে কি?ভগের অধিপতি। ভগ কি? ছয়টি ঐশ্বর্য। যিনি পরম ঐশ্বর্য, বীর্য, যশ, শ্রী, জ্ঞান ও বৈরাগ্য গুনযুক্ত তিনিই ভগবান। এই ছয়টি ভগ একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া আর কার থাকতে পারে?
এ প্রসঙ্গে বলি - ভগবানের একটি যৌগিক ব্যাখ্যাও আছে। এক্ষেত্রে ভগ শব্দের অর্থ পরাশক্তি বা পরা প্রকৃতি বা চঞ্চল মন। আর বান শব্দের অর্থ তীর বা শ্বাস। অর্থাত শ্বাসরুপি বান প্রানায়ামের মাধ্যমে চালনা করতে করতে যার চঞ্চল মন স্থিরতা লাভ করে তিনিই ভগবান। অর্থাত স্থির প্রাণ যা আমাদের মধ্যে আছে তাই ভগবান। সেই ভগবান পরমাত্মাকে লাভ করার জন্যে জীবাত্মার শোধনের যে ক্রিয়া তাকেই সাধনা বলে।
প্রশ্ন - কিন্তু আধ্যাত্মিক জগতে অনেক সাধুও তো নিজেকে ভগবান বলে প্রচার করেন?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - ওনারা বিজ্ঞাপনের ভগবান। ওনাদের কথা বলে আমার সময় নাই বা নষ্ট করলেন। পরনিন্দায় আমার রুচি নেই। আর ওনাদের আলোচনা করে ওনাদের পাপ টানার ইচ্ছা নেই। যারা নিজেদের ভগবান বলে তারা স্বঘোষিত ভগবান থাকুন। যাঁদের মহাজন মহামানবরা শ্রদ্ধা ও ভালবাসা দিয়ে ভগবান পদে বরণ করেন,যেমন শিরদির সাইবাবা,সত্য সাইবাবা,বাবা লোকনাথ - তাঁদের কথা বলুন। আমি তাঁদের সাষ্টাঙ্গে প্রণিপাত জানাই ।
৫ ) প্রশ্ন - আপনি তো ভগবানে বিশ্বাস করেন। কিন্তু বলতে পারেন - সত্যিই যদি তিনি থেকে থাকেন - তাহলে তাঁর সৃষ্টিতে এত অবিচার কেন?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - কোথায় দেখলেন অবিচার?
প্রশ্ন - আজকের যুগে যারা মন্দ তারা ভালো থাকে আর যারা সত্যিই সাধু ব্যক্তি তাঁরা কষ্টে থাকেন। ভগবান সত্যি থাকলে এই অবিচার কি হত?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - খালি চোখে দেখলে অবিচার মনে হওয়া বিচিত্র না। এ প্রসঙ্গে একটি গল্প বলি শুনুন। একবার কৃষ্ণা আর অর্জুন দ্বারকায় এক ধনীর বাড়িতে যান। ধনী তাঁদের বিরাট সমাদর করেন। নিজের ধনদৌলত দিয়ে তাঁদের বিরাট অভ্যর্থনা দেন। কৃষ্ণ খুশি হয়ে বলেন," তোমার ধন আরো বৃদ্ধি পাক।" তারপর তিনি যান এক গরিবের বাড়িতে। সেই ভক্তের একমাত্র সম্বল তার গাভী। সেই গাভীর দুধ দিয়ে তিনি কৃষ্ণের সেবা করেন। কিন্তু কৃষ্ণ তাঁকে আশির্বাদ করে বলেন ,"তোমার গাভীর স্বর্গ প্রাপ্তি হোক। " এতে অর্জুন অবাক হন। কৃষ্ণকে বলেন,"একই তোমার অবিচার সখা?গরিব মানুষটির একমাত্র সম্বল তার গাভী। তুমি সেই গাভীর মৃত্যু চাইলে আর ধনীর এত ধন,তাকে তুমি আরো ধনের আশির্বাদ দিলে?"কৃষ্ণ হাসলেন। বললেন,"সখা যে ধনী,সে তো ধন দিয়েই ভুলে আছে। তাই তাকে আরও ধনের অভিশাপ দিয়ে আরও দুরে সরিয়ে দিলাম আমার থেকে। আর যে গরিব সে তো ১২ আনা মন আমাকে দিয়েই রেখেছে কিন্তু গাভীর দিকে ৪ আনা মন রেখেছে বলে পুরোটা আমাকে দিতে পারছে না। তাই আমি তার গাভীটিকে নিয়ে নিলাম যাতে সে আমাকে পুরো মন দিতে পারে। আর তখনি পূর্ণ হবে তার সরনাগতি। তখন আর তাকে নিজের কথা ভাবতে হবে না। সে ভাববে আমাকে আর আমি ভাবব তার সবকিছু। তবেই দেখছ,আমি স্থুল দুঃখ দিই আমার ভক্তদের ভবদুঃখ ঘোচানোর জন্যে। আর স্থুল সুখ দিই অভক্তদের আমাকে ভুলে থাকার জন্যে।" এই হল ভগবানের বিচার। তিনি আঘাত দেন ,যন্তনায় পুড়িয়ে ছারখার করেন খাঁটি সোনা হিসেবে গড়ে তোলার জন্যে। কারণ তিনি যে শুধু খাঁটি ভক্তকেই কাছে টানেন।
৬) প্রশ্ন - আপনার লেখা পড়ে তো মনে হয় আপনি কৃষ্ণের খুবই ভক্ত। তাহলে কি তিনি আপনাকেও পুড়িয়েছেন ?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - রবিঠাকুরের একটি গান আছে - আমার এ ধুপ না পোড়ালে গন্ধ কিছুই নাহি ঢালে। আমার লেখার যা সুরভির কথা আপনারা বলে থাকেন তা তো তাঁরই দান। না পোড়ালে সেই সুরভি আসত কোথা থেকে?অশ্রুর জলে সিঞ্চিত না হলে সৃষ্টির বীজ কি বৃক্ষের রূপ নিয়ে ডালপালা মেলতে পারে? তবে?এটুকু বলতে পারি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যে সাধনপথে এগোতে হলে বারবার অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে এগোতে হয়।
প্রশ্ন - অর্থাত যা আমার পছন্দের সব ঠাকুর কেড়ে নেবেন?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - কেড়ে নিয়েই যে কড়ি দেন তিনি। ভক্তের পছন্দের কিছু থাকলে যে তাঁকে ভক্ত নিজের সবটুকু দিতে পারবে না। তাই তো ভক্তের ভালো কিছু লাগলে তিনি সযত্নে সেটি সরিয়ে নেন। ফলে তাঁর দিকেই পুরো মনটা রাখা সম্ভব হয়। আর ১৬ আনা তাঁকে দিতে পারলে তবেই তো হয় কৃপার অরুনোদয়। তখনি তিনি হাতে তুলে দেন শেষ পারানির কড়ি।জীবনের মোক্ষম লাভ মোক্ষ তখনি তো মেলে।
৭)
প্রশ্ন - এই মোক্ষ লাভের জন্যে কি করা দরকার ?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - সাধনা।
প্রশ্ন - সেটি কিভাবে করতে হয় ?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - সেটি করা খুব সহজ। সাধনা শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছে তার কার্যকারিতা। অর্থাত - সাধ না করা। মনের খালি বহিরঙ্গের সাধ -এটা চাই,ওটা চাই। মনকে ক্রিয়া,ধ্যান,প্রাণায়াম ,জপ প্রভৃতি দিয়ে এমনভাবে বেঁধে নিতে হয় যাতে সে আর সাধ করার সুযোগ না পায়। অর্থাত মনকে নিয়ন্ত্রণ করাই হল সাধনা। চঞ্চল প্রাণকে স্থির প্রানের স্তরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় এই সাধনার দ্বারা।
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - বৃন্দাবন দর্শন।
প্রশ্ন - মনে মনেই বৃন্দাবন দর্শন?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - মনেই তো আসল বৃন্দাবন -হৃদি বৃন্দাবন। স্থুল বৃন্দাবনে সাধক তো যান শ্রীরাধাকৃষ্ণের কৃপা পেতে যাতে তাঁদের হৃদি বৃন্দাবনের দ্বার উন্মোচিত হয়। বৃন্দাবনের গোপিনীরা হলেন জীবাত্মার প্রতীক আর শ্রীকৃষ্ণ হলেন পরমপুরুষ। আমাদের জীবাত্মাকে সাধনার মাধ্যমে শুদ্ধ করে নিয়ে যেতে হবে গোপিনীর স্তরে আর তারপর মুলাধারে স্থিত জীবাত্মাকে নিয়ে যেতে হবে কুটস্থে। সেখানে যখন গোপিনী জীবাত্মা ও পরমপুরুষ কৃষ্ণের মিলন হবে তখন সেখানেই জাগবে হৃদি বৃন্দাবন। আর অনাহত চক্র থেকে ভেসে আসবে কৃষ্ণের মোহন বাঁশির সুর।
৮)
প্রশ্ন - এই কৃষ্ণকে পেতে হলে কি করা উচিত আমাদের ?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - কিছু না করাই প্রয়োজন।
প্রশ্ন - কিছু না করলে কৃষ্ণলাভ হয় নাকি?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - হয় না?
প্রশ্ন - কি করে হবে ? তপস্যা না করলে প্রারব্ধ তো কাটবে না। তাই জপ তপ ধ্যান সদন না করলে কিভাবে চলবে?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - আর এসব করার পর মনে কিরকম অবস্থা হবে?
প্রশ্ন - তা তো জানি না। কিরকম অবস্থা হবে?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - মনের চঞ্চলতা দূর হবে। আর চঞ্চলতা দূর হলে প্রাণ স্হির হবে। এই স্থির প্রাণ রূপেই যে আমাদের মধ্যে বিরাজ করছেন কৃষ্ণ। তাই জাগতিক কাজকর্মের থেকে মন তুলে নিয়ে আমাদের নিজ আত্মায় আত্মস্থ হতে হবে। অর্থাত মন যে বাহ্যিক বিষয়ে অহরহ ঘুরে বেড়ায় তার থেকে মনকে নিবৃত্ত করাই হল সাধনা। আর সেজন্যেই জপ ধ্যান সব। এগুলো হয়ে গেলে যে স্তর মনে জাগে সেটি হল - নিবৃত্তি। যতক্ষণ মন চঞ্চল ততক্ষণ তা মূলাধার,স্বাধিষ্ঠান আর মনিপুর চক্রের মধ্যেই ঘোরাফেরা করে আর জাগতিক লাভক্ষতির হিসেব করে। যাদের মন এই স্তরে ঘোরে তাদের ইষ্টলাভের কামনাই জাগেনা - তারা জাগতিক সুখ নিয়ে মেতে থাকে। মন যখন যথার্থ ব্যাকুল হয় ঠাকুরের জন্যে তখন মনিপুরের হোমকুন্ডে আগে সকল বাসনা কামনা অঞ্জলি দিতে হয়। ত্তারপরই আসে চঞ্চলতা থেকে স্থিরতায় যাওয়ার সুযোগ - মন অনাহত চক্রে উঠলে সাধনজগতে পদার্পণ হয়।আর মন যত স্থির হবে তত নিজের ভিতরের জগতকে চেনা যায়,নিজেকে চেনা যায় এবং অবশেষে নিজের মধ্যেই কৃষ্ণ লাভ হয়। তখন আর কিছু করতে হয় না - সাধক হয়ে যান দ্রষ্টা এবং স্রষ্টার মত নিজের মাঝে দেখেন সৃষ্টির খেলা। তাই এই অবস্থায় পৌছনো জন্যে মনকে চঞ্চলতা থেকে নিবৃত্ত করতে হয় - মন নিস্ক্রিয় হলে,অর্থাত কিছু করতে না পেলে সাধক তখনি নিজের মধ্যে ডুব দিতে পারেন আর তখনি তিনি অরুপরতনের সন্ধান পান।
৯) প্রশ্ন - কিন্তু মনকে নিষ্ক্রিয় করার উপায় কি?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - সক্রিয় না হতে দেয়া। মনের কাজ হল জীবকে বাইরের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া। সে হল মায়ার কর্মচারী। মায়ার প্রভাব মনের মধ্যে দিয়েই কাজ করে। তাই মনের ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে - মনকে একদম বন্দী করে ফেলতে হবে নিজের ভিতরে।কারণ মন হাজারটা জিনিস নিয়ে আমাদের জ্বালায়। তার কামনার শেষ নেই - যত পাবে তত আরো চাইবে আর সেই চাইতে চাইতে পেতে পেতে জীবনটা হারিয়ে যাবে। তাই জপ,প্রাণায়াম ও ধ্যানের মাধ্যমে মনকে চিন্তাশূন্য করে আত্মার মুলস্বরুপে পৌঁছতে হবে।শ্বাসক্রিয়া মনকে নিবৃত্ত করার একটা বড় উপায়। অশান্ত যখন হয় মন তখন স্বাস চলে দ্রুত।প্রানায়ামের মাধ্যমে সেই শ্বাসের গতিকে ধীর করে নিতে পারলে মনের অশান্তি দেয়ার শক্তিও দুর্বল হয়ে পরে। সেই সময়ে ডুব দিতে হবে নিজের মধ্যে। আমাদের সবার ভিতরেই আত্মস্বরুপে বিরাজ করছেন ঈশ্বর। তার মাঝেই ডোবাতে হবে নিজেকে। আর মন যখনি ভাবনামুক্ত হবে তখনি জাগবে তার ভাব আর সেই ভাবের ঘরেই খুঁজে পাওয়া যায় নিজেকে। সময়ের সাথে সাথে মন্ত্র,গুরু,ইষ্ট সবই মিলেমিশে এক হয়ে যায় আত্মার মধ্যে। তখন সবকিছুর মাঝেই নিজেকে আর নিজের মাঝেই সবকিছুকে খুঁজে পাওয়া যায়। তখনি জাগে "অহম ব্রহ্মাস্মি" ভাব। আর সেই হল নিজেকে জানা। আসল কথা হল - মনকে বিয়োগের খাতা থেকে তুলতে যোগ চাই - সে ভক্তিযোগ,কর্মযোগ,জ্ঞানযোগ,প্রেমযোগ যাই হোক। আপন আত্মার মাঝে পৌছনো হল আসল লক্ষ্য। সেখানে পৌছলেই সব অশান্তির শেষ - শান্তির অরুনোদয়।
প্রশ্ন - কিন্তু সাধারণ মানুষ তো অত কঠিন যোগ করতে পারে না। তারা আপন আত্মায় আত্মস্থ হবে কিভাবে?
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় - সাধারণ মানুষদের জন্যে ভগবান তো গীতা দিয়ে গেছেন। সেইগীতার প্রতিটি অধ্যায় অধ্যায়ন করতে হবে মন দিয়ে।
ভালো থাকবেন .
শুভেচ্ছাসহ
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়.
অভাব থাকে স্বভাবে - তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
আমাদের প্রতিটি মানুষেরই ভিতরে কত অভাব। কারোর ভিতরে প্রীতির অভাব ,কারো ভিতরে দয়ার অভাব ,কারো ভিতরে ভালবাসার অভাব। এগুলি হল মুখ্য অভাব। ধনের অভাবটাকে অবশ্য জাগতিক পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় অভাব ভাবা হয়। কিন্তু সেই অভাব আধ্যাত্মিক দৃষ্টিতে আদৌ অভাব নয় - বরং দেখা যায় যে যার ধন যত কম তার মন তত বড়। আর যার মন যত বড় তার ঐশ্য়র্য তত বেশি। তাই আমাদের মনকে প্রসারিত করতে হবে - ভালবাসার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে সকল মানুষের দিকে - কিন্তু মন যেন না ভাবে charity করছি। মনকে ভাবতে হবে - এটা আমার কর্তব্য। পৃথিবীতে আমরা চিরদিন থাকার জন্যে আসিনি। এখান থেকে যা পাব এখানেই রেখে যাব। তাহলে কেন আমরা যেটুকু পাচ্ছি তা মানুষের সেবায় ঢেলে দেব না ? এই সেবাটাকেই স্বভাবে পরিণত করা আমাদের শরণাগত সম্প্রদায়ের ব্রত। হুগলীর একটি অনাথ আশ্রমে আমরা এই সেবার লক্ষ্য নিয়েই আমরা গেছিলাম - ছোট ছোট ফুলের মত শিশুদের মুখের হাসি দেখার জন্যে। তাদের হাতে কিছু প্রয়োজনীয় বস্ত্র প্রভৃতি তুলে দিয়ে তাদের সেবার লক্ষ্য নিয়ে। তাদের সেবাকরে নিজেরা কৃতার্থ হবার জন্যে । মানুষ অপরের মনে দুঃখ দিয়ে সুখ খোজে বলেই সে এত দুখী। কিন্তু অপরের সেবায় তাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে যে সুখ তা উপভোগের আনন্দই স্বর্গীয় .
ভালো থাকবেন . শুভেচ্ছাসহ তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়.যন্ত্র হয়ো না তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
যন্ত্র হয়ো না
আমরা মানুষরা কি দিন দিন যন্ত্র হয়ে যাচ্ছি? একটু ভেবে দেখলেই বুঝবে - আমরা আদৌ নিজেদের জন্যে সঠিকভাবে ভাবি না। তাই বলে কি আমরা ভাবনার উর্ধ্বে চলে গেছি?তাও নয়। ভাবনা আমাদের মনেই আছে কিন্তু সেটি আমরা ভাবিনা।
আমাদের হয়ে আমাদের ভাবনা ভাবায় টেলিভিশন। প্রায় প্রতিটি ঘরেই দেখা যায় -টেলিভিশনে যত অবাস্তব,ষড়যন্ত্রমূলক সিরিয়ালের ভিড়।বাড়িরপ্রায় সবাই তার সামনে।আগেকার দিনে বাড়ির মেয়েদের যদি বলা হত - সন্ধ্যায় কি করতে হবে?সবাই একবাক্যে জবাব দিত - ঠাকুরকে সন্ধ্যা দিতে হবে।আর এখন?সন্ধ্যা হলে আজ এই সিরিয়াল দেখতে হবে। কোন সিরিয়ালে কোন ভিলেন আজ কি করতে পারে তাই নিয়ে সারাদিন টেনশন গেছে।অতএব সেটা দেখতে হবে।অর্থাৎ - আমাদের ভাবাচ্ছে সিরিয়াল। এতে লাভ কি হচ্ছে- নানা হিংস্র ঘটনার মাকড়সার জল আমাদের সুস্থ মাথায় বুনে দিচ্ছে টেলিভিশন। শুধু তাই নয় - এই টেলিভিশন থেকে আমাদের নবীন প্রজন্মের অবক্ষয়ের বীজও বোনার কাজ চলছে। বেশি টি আর পি পাওয়ার জন্যে তাতে নায়ক নায়িকারা ফ্যাশনের নাম যেসব কুরুচিকর পোশাক পরছে তাই নিয়েই নবীন প্রজন্ম উচ্ছসিত এবং তারাও একেই অনুসরণ করছে। অর্থাৎ - নিজেকে কিসে রুচিশীল লাগবে না ভেবে সেই টেলিভিশনের দেয়া ভাবনায় ভাবছে মানুষ।
আমাদের ভাবায় রাজনীতি। কোন মন্ত্রী কি করলেন আর কি করতে পারতেন তাই নিয়ে আমরা উদ্ভ্রান্ত । আমরা কোনো পার্টিকে অনুসরণ করি আর তারপর সে ভালো এবং অন্যরা খারাপ এই বিশ্বাস নিয়েই থাকি। কিন্তু কখনো ভাবি না যে দেশের জন্যে আমাদেরও কিছু করার আছে। অর্থাৎ - আমরা সমালোচনা করি কিন্তু নিজে কাজে নামতে সাহস পাই না।
আমরা খেলাধুলো নিয়ে ভাবতে ভালবাসি। কিন্তু সেখানেও চলে এসেছে বিনোদন - কিভাবে বেশী রোজগার করা সম্ভব তাই নিয়ে ফাটকা যাতে দেশের নায়করাও যুক্ত। যে আইপিএল নিয়ে আমরা মেতে আছি কয়েক বছর ধরে তার যে প্রায় সবটা চিত্রনাট্যই ঠান্ডাঘরে লেখা হয় উন্মুক্ত মাঠের চেয়ে তাও আমরা প্রায় সবাই জানি,কিন্তু মেতে থাকি সেসব নিয়েই।
অর্থাৎ - সার ছেড়ে অসার নিয়েই আমরা থাকি।আমাদের ভাবনা আমরা ভাবি না,আমাদের ভাবায় অন্য কেউ। আমরা শুধু অন্ধভাবে অনুকরণ করে যাই - যেটা ভালো সেটায় আলো দেখিনা। কারণ ভালোকে কেউ প্রমোট করেনা। যেতে আমদের সর্বনাশ তথা সমাজের সর্বনাশ তাতেই আমরা আগ্রহী। একবার ভেবে দেখো তো - মানুষ শব্দের অর্থ কি?মান আর হুঁশ মিলে মানুষ। আমাদের মান তো আছে ১৬ আনা কিন্তু হুঁশ আছে কি? যদি থাকে একটু ভেবে দেখো - এভাবে আমরা কোন পতনের দিকে এগিয়ে চলেছি।নিজের ভাবনা নিজে ভাব - বিবেককে সঙ্গী করে ভাব।অন্যের কোথায় মনে ভাবনাকে প্রমোট কোর না। ভেবে দেখো - কোন কাজ করলে একইসাথে তোমার পরিবার,অন্যদের পরিবার এবং তুমি সুখে থাকবে। সেই কাজে হাত দিলেই পাবে শান্তি আর আনন্দ। তাই বলব - রোবট হয় না।নিজের ভাবনা নিজেকে ভাবতে দাও। তবেই তো যথার্থ মানুষের মত জীবনে অগ্রসর হতে পারবে তুমি।
ভালো থাকবেন .
শুভেচ্ছাসহ
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়.
শরণাগত সম্প্রদায় তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
Friday, 15 January 2016
শরণাগত সম্প্রদায় আজ উদ্বোধন হল আমাদেরFacebook Page: https://www.facebook.com/Sharanagoto-Somproday-1547359605587016/
Website : http://www.sharanagotosomproday.co.in/
যারা যারা আমার বই পাওয়ার জন্যে আগ্রহী তারা এখানে যোগাযোগ করতে পারেন। এই সম্প্রদায় হল সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের সম্প্রদায়। সব ধর্মের মাধুরীকে সঙ্গে নিয়ে মানবসেবার কাজে নামার জন্যে এই সম্প্রদায়ের সৃষ্টি। এই সম্প্রদায় মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সর্বধর্মের মূল সুত্র শরনাগতির দিকে। তাই তো এর নাম শরণাগত সম্প্রদায়।Email : sharanagoto.somproday@gmail.com
More about Tarashis Gangopadhyay Blog
তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় .........
আমি তারাশিস বলছি.......... http://amitarashisbolchi.blogspot.in/